চতরা: কুর্মি সমাজকে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্তির দাবি—আদিবাসীদের প্রতিবাদে উত্তাল জেলা
চতরা—হাজারো আদিবাসী আজ রাস্তায়—কুর্মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ।
ঝাড়খণ্ডের চতরা জেলায় আজ একটি বিশাল প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল থেকে শহরের প্রধান সড়কে ভিড় জমেছে—পুরো এলাকা প্রতিধ্বনিতে ভরে উঠেছে “আমার পরিচয় আমার অধিকার” জাতীয় উক্তি। প্রতিবাদকারীরা সরকার থেকে দাবি তুলেছেন যে কুর্মি সম্প্রদায়কে এসটি (Scheduled Tribe) তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব বাতিল করা হোক।
স্থানীয় নেতা ও বক্তারা বলছেন— “এসটিতে অন্তর্ভুক্তিকে আমরা আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয় ও অল্পসাধ্যের কারণে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছি। কুর্মি সম্প্রদায় যদিহে এসটি দাবি করে, তাহলে প্রকৃত আদিবাসীদের সুযোগ ও সুযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
র্যালিতে অংশ নেওয়া হাজারো মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে ও প্রতীকী শোভা যাপন করেছে। নারী ও যুবা—সবাই মঞ্চে উঠে এক-এক করে বক্তব্য দিয়েছেন। কয়েকজন বক্তা সতর্ক করে বলেছেন— যদি রাজ্য বা কেন্দ্র এই প্রস্তাব গ্রহণ করে তবে তার বিরুদ্ধেই বৃহত্তর আন্দোলন চলবে।
“আমাদের পূর্বপুরুষরা এই ভূমিতে দিয়েছেন জীবন, তাদের অধিকার আমরা বিক্রি করতে দেব না”— র্যালির এক নেতার তীক্ষ্ণ ধ্বনি।
বিক্ষোভ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ রক্ষা করতে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন বড় পরিসরে উপস্থিত ছিল। তবে এমন বৃহৎ সমাবেশের জন্য প্রশাসন বেঁধে দিয়েছিল শান্তিপূর্ণ আচরণের নির্দেশাবলী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি কেবল একটি স্থানীয় রাজনৈতিক আন্দোলন নয়— এটি আদিবাসী চেতনাবোধ এবং সংবিধানিক সুরক্ষার বিষয়ে একটি বৃহৎ বিতর্কের সূচনা।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের প্রতি র্যালিতে আয়োজকরা দাবি তোলেন— তারা চায় যে কুর্মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকায় নেয়ার যে প্রক্রিয়া আছে তা স্বচ্ছ ও বৈজ্ঞানিক হবে, এবং স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের মতামত ও অনুমতি নেওয়া হবে না হলে কোনও সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলা হবে।
এদিকে কুর্মি নেতারা ঐক্য বাঁধে দাবি জানিয়েছেন যে তাদের সম্প্রদায়ও কয়েক জেলা জুড়ে সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে আছে এবং তারা মিলিয়ে স্থানীয় রিজার্ভেশনের সুযোগ চেয়েছে—তারা জানায় এটি কেবল অধিকার ও সামাজিক সমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অনুরোধ।
নজরকাড়া এক ঘটনা—বৃহৎ সংখ্যক মহিলা সংগঠন র্যালিতে উপস্থিত থেকে বলেছে তারা তাদের পুরনো ঐতিহ্য রক্ষায় যাবেন। বহু বক্তা বলছেন, “স্থায়ী সমাধান পেতে হলে শীর্ষস্তরে আলোচনার দরকার”—এবং সেটাই তারা এখন দাবি করছে।
এই সমাবেশের পরবর্তী ধাপ হিসেবে আয়োজকরা রেল স্টেশন ও সরকারি দফতরের সামনে মিছিল করা, রাঁচি ও দিল্লিতে প্রতিনিধি দল পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে। রাজ্যের রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসনিক কর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন।

0 Comments