🟫 ঝাড়গ্রামের আমডিহায় ৬৩ একর শালবন বিক্রি! সরকারি জমি বেচে দেওয়া হল বেসরকারি মালিকের নামে — চাঞ্চল্য জঙ্গলমহলে!

ঝাড়গ্রাম জেলার আমডিহা এলাকায় ৬৩ একর সরকারি শালবন বিক্রির ঘটনায় উত্তাল গোটা জঙ্গলমহল। জানা গেছে, এই সরকারি বনভূমি বেআইনি ভাবে একাধিক ব্যক্তির নামে “মিউটেশন” করে বিক্রি করা হয়েছে। বনদপ্তর সূত্রে খবর, এই জমি সরকারি সংরক্ষিত বনভূমি হওয়া সত্ত্বেও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং স্থানীয় দালালদের যোগসাজশে, জমির কাগজে কারচুপি করে বেসরকারি নামের খতিয়ান তৈরি করা হয়েছে।
ঘটনাটি সামনে আসে যখন বনদপ্তর পরিদর্শনে গিয়ে লক্ষ্য করে, যেখানে সরকারি শালবন থাকার কথা সেখানে জায়গাটি দখল করা হয়েছে এবং গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে নতুন প্লট তৈরির জন্য। বনদপ্তর সঙ্গে সঙ্গে সেই জমিতে “Govt. Forest Land – Entry Restricted” বোর্ড লাগিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট জমির তথাকথিত ‘ক্রেতা’কে নোটিস পাঠানো হয়েছে। বনদপ্তরের দাবি, এ একেবারেই বেআইনি লেনদেন এবং যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে, স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, এই বন বিক্রির পিছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের এক চক্র। স্থানীয় দালালরা নথিপত্র জাল করে, ভূমি দপ্তরের অসাধু কর্মচারীদের ঘুষ দিয়ে সরকারি জমিকে “বেসরকারি খাসজমি” দেখিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে। গ্রামের অনেকেই জানেন না কোন জমি সরকারের, আর কোনটা ব্যক্তিগত — এই সুযোগেই চলছে জঙ্গল বিক্রির খেলা।
“একদিকে সরকার বলছে ‘সবুজায়ন’, অন্যদিকে সরকারি কর্মকর্তারাই যদি জঙ্গল বিক্রিতে যুক্ত থাকে, তবে জঙ্গলমহলের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।” — তপন মাহাতো, পরিবেশকর্মী
বর্তমানে বনদপ্তর ঘটনাটি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে। প্রশাসনের একাংশ জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত দালাল, মিউটেশন চক্র এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে — যখন আস্ত গ্রাম বিক্রির ঘটনা ঘটেছিল তখন প্রশাসন কোথায় ছিল? জঙ্গলমহলের মানুষ এখন জানতে চাইছেন, সরকারি সম্পদ ও জঙ্গল রক্ষার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনই যদি বিক্রির অংশ হয়ে যায়, তাহলে জঙ্গল রক্ষা করবে কে?


0 Comments