📌 জাহের থান রক্ষা না করলে ভবিষ্যতে বড় বিপদ — নতুন ওয়াক্ফ আইন আমাদের কী শেখায়?
আজকে দেশে যে নতুন ওয়াক্ফ আইন বেরোচ্ছে… তা নিয়ে মুসলিম কমিউনিটির অভ্যন্তরেই তীব্র বিতর্ক চলছে — কারণ আইনটা বলছে:
- 🔹 কোন সম্পত্তি “ওয়াক্ফ” হবে,
- 🔹 কীভাবে রেজিস্টার হবে,
- 🔹 কারা তার মালিক হবে,
- 🔹 ভবিষ্যতে কাদের অধিকার থাকবে—
💠 সব আইনেই নির্ধারিত। মুসলমানরা আজ এই আইন নিয়ে ভয়, সন্দেহ, বিরোধ, বিভ্রান্তি—সবকিছু প্রকাশ করছে। কারণ একটা আইন পুরো কমিউনিটির শত বছর বা শত শত বছরের ধর্মীয় জমি কীভাবে পরিচালিত হবে—তা নির্ধারণ করে দেয়।
➡️ ধর্মীয় জমি নিয়ে আইন তৈরি হলে—সতর্ক না থাকলে নিজেরাই অধিকার হারাতে পারেন।
🪵 এখন প্রশ্ন: আদিবাসীরা কি নিরাপদ?
সাওতাল, মুন্ডা, উরাঁও, পাহাড়িয়া—
আমাদের নিজের ধর্মীয় পরিকাঠামো কি আইনি ভাবে নিরাপদ?
👉 জাহের থান
👉 জাহের এারণ
👉 মান্দার গরাম
👉 মারাং বুরু স্থান
👉 সাধনা কুড়ি / গোঁসাই থান
👉 বুরু-বোঙ্গা স্থান
👉 জান্থরা / হুদিং / বংগা স্থান
এগুলো পুরোপুরি ধর্মীয়। কিন্তু এদের আইনি রেকর্ড একেবারে নড়বড়ে:
- ✔ কোথাও জমি “শ্মশান/কবরস্থান” হিসেবে লেখা
- ✔ কোথাও “জঙ্গল” হিসেবে
- ✔ কোথাও “সার্ভে হয়নি”
- ✔ কোথাও গ্রাম পঞ্চায়েতের নামে চলে গেছে
- ✔ কোথাও প্রাইভেট মালিকের নামে রেকর্ড আছে
অর্থাৎ, জাহের থান আমাদের ধর্ম, কিন্তু জমি আমাদের নামে নেই!
আজ যদি কোনো সরকার, কোনো আইন, অথবা কোনো প্রাইভেট কোম্পানি বলে—
“এই জমি তো তোমাদের নামে রেকর্ড নেই— এটা সরকারি/জঙ্গল/পঞ্চায়েত জমি। আমরা ব্যবহার করবো।”
আপনার কাছে দেখানোর মতো কাগজ থাকবে না। এটাই ভবিষ্যতের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি।
📚 মুসলমানদের নতুন Waqf আইন থেকে আদিবাসীদের শেখার বিষয়
নতুন ওয়াক্ফ আইনে যেমন বলা আছে:
- 🔹 কোন সম্পত্তি কার নামে,
- 🔹 কখন রেকর্ড হবে,
- 🔹 কিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হবে,
- 🔹 কে দেখবে,
- 🔹 কে মামলা করতে পারবে—
এই সবই আইনে পরিষ্কারভাবে লেখা। কিন্তু আদিবাসীদের ক্ষেত্রে এগুলোর একটাও নেই।
❗ আমরা ধর্ম পালন করি। ❗ আমরা জাহের থান রাখি। ❗ আমরা বংগা পূজা করি। ❗ কিন্তু আইনের চোখে—
জাহের থান = মালিকানাহীন / অনির্বাচিত জমি। এটাই ভয়ংকর।
শিক্ষিত নেতাগণের উদ্দেশ্যে তীক্ষ্ণ প্রশ্ন
আপনারা সভায় বলেন— “সংস্কৃতি রক্ষা করবো”, “চিরকালের ঐতিহ্য”। কিন্তু বাস্তব প্রশ্নগুলো—
- 🔹 জাহের থান কি রেজিস্টার করিয়েছেন?
- 🔹 জাহের থান কি আইনে সুরক্ষিত?
- 🔹 জমির রেকর্ডে কি ‘Adivasi Sacred Site’ লেখা আছে?
- 🔹 সংরক্ষিত জোন তৈরি করতে কি সরকারকে আবেদন করেছেন?
- 🔹 জমির রেকর্ড না থাকলে ভবিষ্যতে রক্ষা করবেন কী দিয়ে?—বক্তৃতা দিয়ে?
মাঠে বোকা মানুষের হাহাকার নয়—আজ দরকার আইনি সুরক্ষা।
🔊 সতর্কবার্তা: আজ কথা না বললে, কাল আমাদের অস্তিত্ব নিয়েই বিতর্ক উঠতে পারে।
ওয়াক্ফ আইনে মুসলিমরা যতই শক্ত লড়াই করুক—তারা অন্তত একটি আইনি কাঠামো পেয়েছে। আমাদের কাছে এই রকম কোনো কাঠামো নেই।
💠 আমাদের কী নেই?
- 🔹 জাহের থান আইন নেই
- 🔹 পবিত্র বংগা স্থান আইন নেই
- 🔹 Sacred Grove Protection Act নেই
- 🔹 Worship Land Registry নেই
- 🔹 Gram Sabha সিদ্ধান্ত বাধ্যতামূলক নয়
সোজা কথায়— যে দিবে আইন—সে-ই ঠিক করবে আমাদের ধর্মের জমির ভবিষ্যৎ। আর আমরা চুপ থাকলে—একদিন বলা হতে পারে,
“জাহের থান সরকারি জমি। মাটি কেটে এখানে রাস্তা হবে / প্রকল্প হবে / কারখানা হবে…”
তখন কাঁদলেও লাভ হবে না।
- ✔ প্রতিটি জাহের থানকে “Adivasi Sacred Site” হিসেবে রেকর্ডে চিহ্নিত করা
- ✔ গ্রামসভা রেজুলেশন করে স্থায়ী নথি করা
- ✔ Forest Rights Act ব্যবহার করে Community Resource Land দাবি করা
- ✔ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট থেকে ধর্মীয় স্থানের স্থায়ী নথিভুক্তি
- ✔ রাজ্য সরকারকে “Adivasi Sacred Places Protection Act” তৈরির দাবি
- ✔ প্রতিটি জাহের থান ডিজিটাল ম্যাপিং
এগুলো শিগগির না হলে ভবিষ্যতে ভয়ংকর বিপদ আসবে।
✊ শেষ কথা — ওয়াক্ফ আইন আমাদের দেখায়: ধর্মীয় জমি আইন ছাড়া টিকে না।
আজ যদি আমরা শুধুই বলি “এটা আমাদের ঐতিহ্য” বা “এটা আমাদের ধর্ম” — আর আইনি ব্যবস্থা না নেই — তাহলে ভবিষ্যতে জাহের থানও আমাদের থাকবে না।
কাজেই—❗ এখনই এক হও, সচেতন হও, জাহের থানকে আইনি সুরক্ষার আওতায় আনো। ❗ নইলে ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে থাকবে না।

0 Comments